রাজনীতি

ফের নাশকতার কর্মসূচির ছক আওয়ামী লীগের

17views

ছাত্র-জনতার আন্দোলনে ক্ষমতাচ্যুত ও কার্যক্রম নিষিদ্ধ আওয়ামী লীগ আবারও জ্বালাও-পোড়াও ছক এঁকে বিক্ষোভ মিছিল ও লক ডাউনের কর্মসূচি নিয়ে মাঠে নামাছে। ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন ঠেকানো এবং বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারের পতন ঘটানোই দলটির মূল লক্ষ্য বলে জানা যায়। এ জন্য নির্বাচনকে সামনে রেখে দলটির নেতাকর্মীরা সংগঠিত হওয়ার চেষ্টা চালাচ্ছেন। এরই অংশ হিসেবে আজ শুক্রবার সারা দেশে বাদ জুমা বিক্ষোভ মিছিল ও আগামীকাল শনিবার ঢাকাসহ সারা দেশে সকাল-সন্ধ্যা লকডাউন কর্মসূচি ঘোষণা করেছে কার্যক্রম নিষিদ্ধ হওয়া দলটি।

সূত্র বলছে, ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগ আজ শুক্রবার সারা দেশে বাদ জুমা বিক্ষোভ মিছিল ও আগামীকাল শনিবার ঢাকাসহ সারা দেশে সকাল-সন্ধ্যা লকডাউন কর্মসূচি সফল করতে রাজধানীর কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্ট আগেভাগেই চিহ্নিত করে রেখেছে। এই কর্মসূচির আড়ালে সরকারি ভবন, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, উপাসনালয় ও গণপরিবহনকে লক্ষ্য করে অগ্নিসংযোগ, হামলা ও ধ্বংসাত্মক কর্মকাণ্ডের নকশা তৈরি করা হয়েছে। নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পর এ ধরনের কর্মসূচি নিয়ে মাঠে ঘোষণা দিয়েছে কার্যক্রম নিষিদ্ধ ঘোষিত দলটি। ডিসেম্বরকে তারা ‘বিজয়ের মাস’ আখ্যা দিয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় একাধিক ভিডিওবার্তায় নতুন কর্মসূচির ইঙ্গিত দিয়েছে। দলের অঙ্গ, সহযোগী ও ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠনের নেতাকর্মীরাও গোপনে বৈঠক করছেন বলে একাধিক সূত্র জানিয়েছে। তবে এসব আলোচনায় কোনো আনুষ্ঠানিক সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে কি না- তা নিশ্চিতভাবে জানা যায়নি।

গত ১৩ নভেম্বর আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধের রায়ে তাকে মৃত্যুদণ্ড দেওয়াকে কেন্দ্র করে অনলাইনে ‘লকডাউন’ কর্মসূচি ঘোষণা করে দলটি। ওইদিন ঢাকাসহ বিভিন্ন স্থানে বিচ্ছিন্ন সহিংসতায় অংশ নেওয়া হয় বলে অভিযোগ রয়েছে। ১৭ নভেম্বরও ‘সম্পূর্ণ শাটডাউন’ কর্মসূচির নামে একাধিক এলাকায় বিস্ফোরণ, অগ্নিসংযোগ ও ভাঙচুর ঘটে। এ কর্মসূচিগুলোতে রাজধানীসহ কয়েকটি জেলায় সীমিত মিছিল, প্রতিবাদ এবং বিচ্ছিন্ন সহিংসতার ঘটনা ঘটে। কয়েকটি এলাকায় ককটেল বিস্ফোরণ এবং ভাঙচুরের খবর পাওয়া যায়। তবে সার্বিকভাবে কর্মসূচিতে বড় পরিসরে সাড়া পায়নি বলে জানান আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা। নিরাপত্তা বাহিনী জানায়, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে ঘটনাপ্রবাহ অনুযায়ী প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছিল। বর্তমানে গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনাগুলোতে নজরদারি জোরদার রয়েছে।

রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, নির্বাচনের আগে যেকোনো ধরনের উত্তেজনা বা সহিংসতা দেশের সামগ্রিক রাজনৈতিক স্থিতিশীলতার জন্য ঝুঁকিপূর্ণ হতে পারে। তাদের মতে, বিরোধী রাজনীতির ক্ষেত্র সংকুচিত থাকলেও সহিংস কর্মসূচি কোনো পক্ষের জন্যই দীর্ঘমেয়াদে লাভজনক নয়। বিস্তৃত জনসমর্থন ছাড়া বড় ধরনের রাজনৈতিক কর্মসূচি বাস্তবায়ন কঠিন।

আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর একাধিক কর্মকর্তা জানিয়েছেন, নির্বাচন ঘিরে প্রতিটি রাজনৈতিক দলের কর্মসূচি নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে। সম্ভাব্য ঝুঁকির জায়গাগুলো চিহ্নিত করা হয়েছে এবং অতিরিক্ত টহল নিশ্চিত করা হয়েছে।তারা জানিয়েছেন, যেকোনো রাজনৈতিক কর্মসূচি শান্তিপূর্ণ হলে সেটি বাস্তবায়নে কোনো বাধা দেওয়া হবে না। কিন্তু সহিংসতা ঘটলে আইন অনুযায়ী কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

রাজনৈতিক বিশ্লেষক ডা. জাহেদ উর রহমান বলেন, আওয়ামী লীগ ভুলের পথেই হাঁটছে। শেখ হাসিনা যতদিন এ দলের মধ্যে থাকবেন ভুলের পথেই থাকবেন। যদি তাদের রাজনৈতিক দল হিসেবে ফিরে আসতে হয়, তাকে রাজনীতি করে ফিরে আসতে হবে। সন্ত্রাসী চোরাগোপ্তা করে কিছুটা ডিস্টারবেন্স তৈরি হতে পারে, কিছু মানুষকে টার্গেটেড কিলিং করানো যেতে পারে। কিন্তু দিনশেষে রাজনীতি দাঁড়াবে না।আরেক রাজনৈতিক বিশ্লেষক মহিউদ্দিন আহমেদ বলেন, আওয়ামী লীগ গত ১৩ ও ১৭ নভেম্বর শেখ হাসিনার মামলার রায় ঘোষণা কেন্দ্র করে জ্বালাও-পোড়াও কর্মসূচি দিয়েছিল। ওই কর্মসূচিতে মানুষ সারা দেয়নি। তবে মানুষ কিছুটা আতঙ্কিত হয়ে পড়েছিল। আওয়ামী লীগ ব্যাকফুটে চলে গেছে। তাদের আর সামনে আগানোর সুযোগ নেই।

আরেক রাজনৈতিক বিশ্লেষক মহিউদ্দিন আহমেদ বলেন, আওয়ামী লীগ গত ১৩ ও ১৭ নভেম্বর শেখ হাসিনার মামলার রায় ঘোষণা কেন্দ্র করে জ্বালাও-পোড়াও কর্মসূচি দিয়েছিল। ওই কর্মসূচিতে মানুষ সারা দেয়নি। তবে মানুষ কিছুটা আতঙ্কিত হয়ে পড়েছিল। আওয়ামী লীগ ব্যাকফুটে চলে গেছে। তাদের আর সামনে আগানোর সুযোগ নেই।

Leave a Response