
ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরিফ ওসমান হাদির জানাজা সম্পন্ন হয়েছে। শনিবার দুপুর ২টা ৩৩ মিনিটে জাতীয় সংসদ ভবনের দক্ষিণ প্লাজায় বিভিন্ন শ্রেণি–পেশার হাজারো মানুষের উপস্থিতিতে তার জানাজা অনুষ্ঠিত হয়।
হাদির জানাজার নামাজ পড়ান তার বড় ভাই আবু বকর সিদ্দিক। এসময় পুরো এলাকায় শোকাবহ পরিবেশের সৃষ্টি হয়।
জানাজায় অংশ নিতে সকাল থেকে মানিক মিয়া অ্যাভিনিউয়ে মানুষের ঢল নামে। ‘আমরা সবাই হাদি হবো, যুগে যুগে লড়ে যাবো’, ‘হাদি ভাইয়ের রক্ত বৃথা যেতে দেব না’—এমন স্লোগান দিয়ে সবাই মানিক মিয়া অ্যাভিনিউয়েয়ে প্রবেশ করেন।
জানাজা উপলক্ষে মানিক মিয়া অ্যাভিনিউ ও আশপাশে নেওয়া হয় বিশেষ নিরাপত্তা ব্যবস্থা। সেনাবাহিনীর পাশাপাশি পুলিশ, র্যাব ও আনসার সদস্য মোতায়েন করা হয়। এছাড়া, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা টহল দেন।
জানাজার নামাজ শেষে তাকে দাফনের জন্য নেওয়া হয় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায়। সেখানে জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের সমাধির পাশে তাঁকে দাফনের প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। সকালে সেখানে কবর খননের কাজ শুরু হয়। এ সময় সেখানে ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর সাইফুদ্দিন আহমেদ, ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) রমনা জোনের উপকমিশনার (ডিসি) মাসুদ আলম, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কয়েকজন শিক্ষক ও প্রক্টরিয়াল বডির সদস্যরা।
এর আগে জাতীয় হৃদরোগ ইনস্টিটিউটের হিমঘর থেকে শরিফ ওসমান হাদির মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য সোহরাওয়ার্দী হাসপাতালে নেওয়া হয়। ময়নাতদন্ত শেষে মরদেহ নেওয়া হয় জাতীয় সংসদ ভবনের দক্ষিণ প্লাজায়।
মরদেহ নিয়ে আসার সময় হাদির পরিবারের সদস্য, সহকর্মী ও শুভানুধ্যায়ীরা উপস্থিত ছিলেন। মরদেহ সংসদ ভবনের দক্ষিণ প্লাজায় আনা হলে সেখানে শোকাবহ পরিবেশের সৃষ্টি হয়।
গত ১২ ডিসেম্বর দুপুর সোয়া ২টার দিকে রাজধানীর বিজয়নগর পানির ট্যাংকির সামনে রিকশায় করে যাওয়ার সময় ওসমান হাদির উপর আক্রমণ হয়। ওই সময় মোটরসাইকেলে এসে দুজন তাকে খুব কাছ থেকে গুলি করে পালিয়ে যায়। পরে আশঙ্কাজনক অবস্থায় দ্রুত তাকে ঢাকা মেডিকেলের জরুরি বিভাগে নেওয়া হয়।
একপর্যায়ে তাকে রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়। এরপর সেখানে নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউ) তার চিকিৎসা চলে। পরে উন্নত চিকিৎসার জন্য এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে হাদিকে সিঙ্গাপুর নিয়ে যাওয়া হয়; সেখানেই বৃহস্পতিবার তার মৃত্যু হয়।






